সংবাদ ডেস্ক :: কুমিল্লার দেবিদ্বারে শীতে এক সময় ‘অতিথি পাখি’ আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। মানিকজোড়, শামুকখোল জাতীয় বড় পাখি, আবার ছিল হরিয়ালের মতো সবুজ রঙের সুন্দর পাখি, নানা ধরনের বক, মাছরাঙা, কাঠঠোকরা, টিয়া, বালিহাঁস, বুলবুলি, বাবুই, মুনিয়া, শকুনি, চিল, শঙ্খচিল, বাজপাখিসহ অসংখ্য ছোট-বড় পাখির দেখা মিলতো সেখানে।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে শীতে এক সময় ‘অতিথি পাখি’ আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। মানিকজোড়, শামুকখোল জাতীয় বড় পাখি, আবার ছিল হরিয়ালের মতো সবুজ রঙের সুন্দর পাখি, নানা ধরনের বক, মাছরাঙা, কাঠঠোকরা, টিয়া, বালিহাঁস, বুলবুলি, বাবুই, মুনিয়া, শকুনি, চিল, শঙ্খচিল, বাজপাখিসহ অসংখ্য ছোট-বড় পাখির দেখা মিলতো সেখানে।দেবিদ্বার উপজেলা সদরের মরা গাঙ ও বিলে শীত মৌসুমে জমতো অতিথি পাখিদের এই মিলন মেলা। সকালের ঘুম ভাঙতো মুক্ত খোলা আকাশে ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া অতিথির পাখিদের কিচিমিচির ডাকে। এসব অতিথি পাখিরা মুক্ত আকাশে উড়ে ক্লান্ত শেষে দল বেঁধে নেমে পড়তো মরা গাঙে ও বিলে। আর ডুবে ডুবে ছোট মাছ শিকার করতো। গাঙের এক প্রান্ত থেকে ডুব দিয়ে অন্য প্রান্তে মুখে ছোট মাছ নিয়ে ভেসে উঠতো এসব অতিথি পাখিরা। পুরো বিল মরা গাঙেই ছিল অতিথি পাখিদের মাছ দিয়ে আপ্যায়নের অনন্য দৃশ্য। এখন আর সেই কিচিমিচির ডাক শুনা যায় না।
বিলে ও মরা গাঙে মাছ ধরার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, বিল দখল, পানির দুর্গন্ধ, মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায়, অপরিকল্পিত আবাসন নির্মাণসহ নানা কারণে অতিথি পাখিরা এখন আর আসছে না। এছাড়াও খাবারের অভাব ও মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে প্রতি বছরই মারা যাচ্ছে এক লাখ করে ধীর প্রজননের পাখি।
গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্ব জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাবে বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের, হুমকির মুখে জীব বৈচিত্র্য। আর এতে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে চেনা জানা বহু অতিথি পাখি। উপজেলার দেবিদ্বারেও বিলুপ্তির পথে প্রায় শতাধিক প্রজাতির অতিথি পাখি। হারিয়ে যাচ্ছে পরিচিত পাখিদের ডাক আর কোলাহল। পাখির কলতানে ঘুম ভাঙ্গা যেন হয়ে উঠছে রুপকথার গল্প। বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আবাসন হারানো ও মানুষের কর্মকাণ্ডের কারণে কমে যাচ্ছে নানা প্রজাতির অতিথি পাখি।
পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীব বৈচিত্রের বিলুপ্তি রোধে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। অন্য বড় পাখিগুলোও আবাস এবং অন্যভাবে খাদ্য সংকটের জন্য বিলুপ্ত হচ্ছে। শুধু বড় পাখিই নয়, ছোট জাতের পাখিও ক্ষেতে এবং বিলে বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহারের কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে। পাখিরা মাঠে যে ধরনের কীট খেয়ে থাকে সেগুলো কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় মারা যায় এবং সেই বিষাক্ত কীট খেয়ে পাখিদেরও মৃত্যু হয়। এছাড়া খাওয়ার জন্য যে ব্যাপকভাবে পাখি শিকার করা হয় সেটাও অতিথি পাখি বিলুপ্ত হতে থাকার অন্যতম কারণ। আগে মানুষ যেসব পাখি মানুষ খেত না এখন সেগুলোও মেরে খেয়ে ফেলছে।
পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকৃতিতে যদি পাখি না থাকে, তবে মারাত্মকভাবে কীটপতঙ্গ ও পোকা মাকড়ের বংশ বৃদ্ধি ঘটিতে পারে। গুটিকয়েক মানুষের লালসার শিকার পাখি কিংবা বন্যপ্রাণী উভয়েরই অসংখ্য প্রজাতি আজ বিলুপ্তির পথে।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবীন্দ্র চাকমা বলেন, ‘অতিথি পাখি নিধন মারাত্মক অপরাধ। এ অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। অতিথি পাখি ধরার খবর পেলে অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে। অতিথি পাখি রক্ষায় প্রশাসন কঠোর ভূমিকা রাখবে। তবে এ ব্যাপারে ব্যাপক সামাজিক সচেতনতাও প্রয়োজন।’
… [Trackback]
[…] Info on that Topic: dailyshongbad.com/2017/12/30/মরা-গাঙ-ও-বিলে-আসে-না-অতিথি/ […]
… [Trackback]
[…] Find More on that Topic: dailyshongbad.com/2017/12/30/মরা-গাঙ-ও-বিলে-আসে-না-অতিথি/ […]
… [Trackback]
[…] Find More here on that Topic: dailyshongbad.com/2017/12/30/মরা-গাঙ-ও-বিলে-আসে-না-অতিথি/ […]
… [Trackback]
[…] Info on that Topic: dailyshongbad.com/2017/12/30/মরা-গাঙ-ও-বিলে-আসে-না-অতিথি/ […]