মৌলভীবাজার সংবাদদাতা : এসে গেছে শীত। বাইক্কা বিলে আসতে শুরু করেছে নানা প্রজাতির হাঁস। দেখা মিলছে হাঁসদের মায়াবি উপস্থিতি। ঢেউ খেলে যাওয়া পানিতে হাঁসদের ক্রমাগত ডুব আর ডুব শুধু দৃষ্টির সৌন্দর্যই তুলে ধরে না; বাড়ায় বিলের সুস্বাস্থ্যের দিকটিও। চারদিক দিক থেকে হাজার হাজার হাঁস ঝাঁকে ঝাঁকে এই বিলের আশ্রয়প্রার্থী হয়।

আর বিলও এ সকল পরিযায়ীদের অনায়াসে বরণ করে নেয়। জলজ উদ্ভিদের ব্যাপক যোগান দিয়ে শোধ করে প্রাকৃতিক ঋণ। যে শাপলাটি কিংবা পদ্ম বিলের পানিতে চোখ মেলে উন্মুক্ত আকাশের দিকে তাকায়, তার গায়েও হাঁসেদের লোমশ উচ্ছ্বাস এসে স্পর্শ করে। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে উড়ে আসা হাঁসেদের ডানার বিরামহীন গতি জলজ উদ্ভিদের সর্বাঙ্গে প্রেরণা যোগায়। যেন অল্প দিনেই বেড়ে ওঠে তারা।

বাইক্কা বিলের প্রাচীন অধিবাসী পরিযায়ী রাজ-শরালি। ইংরেজিতে এ হাঁসটিকে বলে Fulvous Whistling Duck এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম Dendrocygna bicolour।

প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাজ-শরালির (Fulvous Whistling Duck) কথা লিখতে গেলেই পাতি-শরালির (Lesser Whistling Duck) কথা উঠবে; এ জন্য যে, লোকে যেন এ দুটো হাঁসকে আলাদা করে চিনতে পারেন। পাতি-শরালি আমাদের দেশে সারা বছরই থাকে এবং বিলে ছড়িয়ে থাকে। ধানক্ষেতের মধ্যে যেখানে যেখানে পানি আসে সেখানে তারা থাকে। তাড়া করলে ওরা গাছে উঠে যায়। ওরা পালিয়ে বাঁচতে পারে বলে ওরা এখনো টিকে আছে। শীতের সময় ধান ক্ষেতেও কোনো পানি থাকে না। তাই তখন ওরা বড় বড় বিল বা হাওরে চলে আসে।’

‘কিন্তু যে শরালিটা আমাদের দেশে থাকেই না এবং শীত মৌসুম এলেই সে আমাদের দেশে চলে আসে সে হলো রাজ-শরালি। পাতি-শরালি এবং রাজ-শরালি দেখতে অনেকখানি একরকম। তবে তফাৎ আছে। ওরা বসলে দেখা যায় যে, একটা আরেকটার থেকে বড়। রাজ-শরালি ৫১ সেন্টিমিটার এবং পাতি-শরালি ৪২ সেন্টিমিটার। এছাড়াও যেটি বোঝা যায় যে, ও বসলে ডানা যেখানে ভাজ হয় যেখানে অনেকগুলো সাদাটে পালক থাকে।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here