সংবাদ ডেস্ক :: ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বীকৃতির জেরে বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। বুধবার ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানীর ঘোষণা দেয়ার কথা রয়েছে ট্রাম্পের।

তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস না সরিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণার পর মুসলিম ও আরব বিশ্বে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। হোয়াইট হাউসের শীর্ষ এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে এখনই তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস সরানো হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে আরব বিশ্বের শান্তি প্রক্রিয়া নষ্ট হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আরব দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র যদি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়; তাহলে এর পরিণতি বিপজ্জনক হবে বলে এর আগে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেছে জর্ডান।

ওয়াশিংটনের এ ঘোষণার ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতে সহিংসতা শুরু হতে পারে। সহিংসতার আশঙ্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জেরুজালেমের ওল্ড সিটি ও পশ্চিম তীর এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্র দফতরের সতর্কতা বলবৎ থাকবে বলে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

হোয়াইট হাউসে কূটনৈতিক অভ্যর্থনা কক্ষে ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর ঘোষণা দেবেন। প্রাচীন ইতিহাস ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে ট্রাম্প এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। জেরুজালেমে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট ও সরকারি বিভিন্ন কার্যালয় রয়েছে।

মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট জেরুজালেমে নতুন মার্কিন দূতাবাস ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেবেন। তবে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বলেছেন, এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে কমপক্ষে তিন বছর সময় লাগতে পারে। দূতাবাসের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তেল আবিবেই মার্কিন দূতাবাস থাকবে।

জেরুজালেম ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেয়া অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বোরিস জনসন বলেছেন, ট্রাম্পের পদক্ষেপে তিনি বেশ উদ্বিগ্ন। চলুন অপেক্ষা করি, প্রেসিডেন্ট আসলে কী বলেন।

জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানীর স্বীকৃতি দেয়ার আগের সন্ধ্যায় জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাতাহ আল-সিসি, সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু দেনেহ বলেছেন, টেলিফোনে ট্রাম্পকে সতর্ক করে দিয়ে ফিলিস্তিনি নেতা বলেছেন, এ ধরনের বিপজ্জনক সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বের ও মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

জেরুজালেম ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের কাছে একটি পবিত্র স্থান। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। ইসরায়েল সব সময়ই জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী বলে দাবি করছে। অপরদিকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমের পূর্বাঞ্চলকে দেখতে চায় ফিলিস্তিনিরা।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here