সংবাদ ডেস্ক :: ভারতের উত্তরপ্রদেশ থেকে ছয় মাস আগে নিখোঁজ হয় এগারো বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে গডনা। নিখোঁজের দিন পুলিশের কাছে গিয়ে কোনো সাহায্য না পেয়ে, সাইকেলে চড়ে বেরিয়ে পড়েন আটচল্লিশ বছরের বাবা সতীশ চন্দ। কিন্তু শূন্য হাতেই ফিরতে হয় তাকে।

জানা গেছে, ছেলের খোঁজে কখন তিনি নিজের রাজ্য পেরিয়ে চলে গিয়েছেন দিল্লি, হরিয়ানা- তা খেয়াল করেননি। ৫ মাস ধরে দেড় হাজার কিলোমিটার পথ সাইকেলে অতিক্রম করে ফেলেছেন সতীশ। ছেলেকে যে তাকে খুঁজে বের করতেই হবে। মন অবসন্ন ঠিকই, কিন্তু এত পথও পেরিয়েও যেন কোনো ক্লান্তির ছাপ নেই তার শরীরে। যেখানে গিয়েছেন পথচলতি মানুষকে ছেলের ছবি দেখিয়ে জানতে চেয়েছেন কেউ তাকে দেখেছে কি না। এখনও কোনো সদুত্তর মেলেনি। তবে খুঁজে পাওয়ার আশাতেই সাইকেলের প্যাডেলে পা চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রৌঢ়। আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘লোকে আমাকে জিজ্ঞাসা করে কেন এমন পদক্ষেপ করলাম। কিন্তু তারা বোঝে না, সন্তান হারিয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা কতটা।’

তিনি জানান, ২০০৫ এ মেয়ে সরিতা অসুখে ভুগে মারা যায়। ২০১১ সালে মারা যায় তার অন্য এক সন্তান। গত জুনে ছেলে গডনাও নিখোঁজ হয়ে যায়। শেষ সম্বলকে খুঁজতে তাই আর পিছনের দিকে তাকাননি। সতীশ জানান, গত ২৪ জুন বাড়ি থেকে স্কুলের যায় গডনা। বাড়ি থেকে স্কুল এক কিলোমিটারের মধ্যেই। সন্ধে হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় স্কুলে খোঁজ নিতে যান তিনি। কিন্তু সেখানেও ছেলেকে না পেয়ে তার কয়েকজন বন্ধুর বাড়িতে যান। পথে যেতে যেতে কেউ এক জন তাকে বলেন গডনাকে সাসনি রেলস্টেশনে দেখা গিয়েছে। সেখানেও ছুটে যান। কিন্তু না, হদিস পাননি তার।

তার পর চার দিন ধরে খোঁজ করেন। অবশেষে ২৮ জুন পুলিশের দ্বারস্থ হন সতীশ। অভিযোগ, পুলিশ এফআইআর নিতে অস্বীকার করে। বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও কোনো কান দেয়নি পুলিশ। অগত্যা নিজেই ছেলেকে খোঁজার দায়িত্ব নিয়ে ফেলেন। বেরিয়ে পড়েন নিজের সাইকেল নিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, শহর ছাড়িয়ে অন্য রাজ্যে। আনন্দবাজার।

2 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here