সংবাদ ডেস্ক :: পরিবেশ দূষন, গাছ কাটা, পশুপাখি শিকার, খাদ্য হিসেবে নামি দামী হোটেলে বিক্রি, সহ নানা কারনে হুমকির মুখে আমাদের চিরচেনা পশু পাখিগুলো।

জীববৈচিত্র সংরক্ষণসংক্রান্ত আইন, বিধিমালা ও আদেশ থাকলেও কাজে লাগছে না কিছুই, আইন প্রয়োগ হচ্ছে কতটুকু এই বিষয়টা নিশ্চিয় হওয়া যায় যখন নামী রেস্তোরাঁর খাবারের প্লেটে বিলুপ্ত পাখি ঘুঘু’র বিরিয়ানী পাওয়া যায়। বিলুপ্তির পথের প্রাণীদের আমার তোলা কিছু ছবি এবং সবজান্তা উইকিপিডিয়া থেকে কিছু তথ্য নিয়ে আজকের এই আয়োজন। যদিও এরা ছাড়াও আরো অনেক হারিয়ে যাওযা প্রাণী যাছে, ওদেরকেও এক এক করে তুলে ধরবো কোনো একদিন নিশ্চয়!

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়: বাংলা বুলবুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Pycnonotus cafer) লালপুচ্ছ বুলবুলি বা কালচে বুলবুলি Pycnonotidae (পাইকনোনোটিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Pycnonotus (পাইকনোনোটাস) গণের এক প্রজাতির অতি পরিচিত দুঃসাহসী এক পাখি। বুলবুলি হিসেবে এরা সুপরিচিত। পাখিটি পূর্ব, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয়। এছাড়া বহু দেশে পাখিটি অবমুক্ত করা হয়েছে। বাংলা বুলবুলের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ দক্ষিণ আফ্রিকার নিবিড়পিঠ পাখি (গ্রিক puknos = নিবিড়, noton = পিঠ; ল্যাটিন cafer = দক্ষিণ আফ্রিকার)। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ৪১ লাখ ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। পৃথিবীতে এদের মোট সংখ্যা কত তা এখনও অজানা। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। লড়াকু পাখি হিসেবে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি রয়েছে পাখিটির। বাংলার শহর-নগর-গ্রামে-গঞ্জে প্রচুর পরিমানে বাংলা বুলবুল দেখা যায়। বাংলা সাহিত্যের গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও লোকগাঁথায় বার বার এসেছে এ পাখিটির নাম।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়: প্যাঁচা, পেঁচা, বা পেচক এক প্রকার নিশাচর শিকারী পাখি। স্ট্রিজিফর্মিস বর্গভূক্ত এই পাখিটির এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০টি প্রজাতি টিকে আছে। বেশীরভাগ প্যাঁচা ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন ইঁদুর এবং কীটপতঙ্গ শিকার করে, তবে কিছু প্রজাতি মাছও ধরে। প্যাঁচা উপর থেকে ছোঁ মেরে শিকার ধরতে অভ্যস্ত। শিকার করা ও শিকার ধরে রাখতে এরা বাঁকানো ঠোঁট বা চঞ্চু এবং নখর ব্যবহার করে।

কুমেরু, গ্রীনল্যান্ড এবং কিছু নিঃসঙ্গ দ্বীপ ছাড়া পৃথিবীর সব স্থানেই প্যাঁচা দেখা যায়। বাংলাদেশে ১৭টি প্রজাতির (মতান্তরে ৮ গণে ১৫ প্রজাতি) প্যাঁচা পাওয়া যায়, যার মধ্যে ২৫টি স্থায়ী এবং ২টি পরিযায়ী। প্যাঁচা মূলত নিঃসঙ্গচর। এরা গাছের কোটর, পাহাড় বা পাথরের গর্ত বা পুরনো দালানে থাকে। শহর অঞ্চলে এখন তেমন দেখা মেলেনা এই পাখিটির।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়: ভারতীয় কোকিল বা বউ কথা কও (ইংরেজি ভাষায়: Indian Cuckoo, বৈজ্ঞানিক নাম: Cuculus micropterus) কোকিল গোত্রীয় পাখি পরিবারের সদস্য। কোকুলিফর্মস বর্গের অন্তর্ভুক্ত বউ কথা কও পাখিটি এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার পূর্বঞ্চল থেকে ইন্দোনেশিয়া, চীনের উত্তরাঞ্চল, রাশিয়া প্রভৃতি দেশে দেখা যায়। একাকী, নিভৃতচারী ও লাজুক পাখি হিসেবে এর পরিচিতি রয়েছে। বনাঞ্চলসহ উন্মুক্ত গাছ-গাছালিপূর্ণ এলাকা থেকে শুরু করে ৩,৬০০ মিটার উঁচুতেও এদের দেখা যায়। শহর অঞ্চলে এখন তেমন দেখা মেলেনা এই পাখিটির।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়: টুনটুনি আকারে ছোট পাখি। এদের যত চালাক পাখি ভাবা হয় আসলে তা নয়। এরা যেমন চালাক তেমন বোকা। টুনটুনি বিপদ দেখলেই চেঁচামেচি করে। ফলে সহজেই শত্রুর কবলে পড়ে। এই ছোট্ট পাখিটি বর্তমানে বিলুপ্তির পথে।শহর অঞ্চলে এখন তেমন দেখা মেলেনা এই পাখিটির।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়: বাংলা কাঠঠোকরা (বৈজ্ঞানিক নাম: Dinopium benghalense) Picidae (পিসিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Dinopium (ডাইনোপিয়াম) গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির অতি পরিচিত পাখি । পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। বাংলা কাঠঠোকরার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ বাংলার বলীয়ান (গ্রিক: denios = শক্তিমান, opos = চেহারা; লাতিন: benghalense = বাংলার)। সারা পৃথিবীতে এক সীমিত এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ৩০ লক্ষ ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে, আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

শহুরে এলাকায় বসবাস করে এমন অল্পসংখ্যক কাঠঠোকরার মধ্যে বাংলা কাঠঠোকরা একটি। তীক্ষ্ন করকরে ডাক আর ঢেউয়ের মত উড্ডয়ন প্রক্রিয়া এ প্রজাতিটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য। ডাইনোপিয়াম গণের সদস্যদের মধ্যে একমাত্র এরই গলা ও কোমর কালো।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়: দোয়েল প্যাসেরিফরম (অর্থাৎ চড়াই-প্রতিম) বর্গের অন্তর্গত একটি পাখি। এর বৈজ্ঞানিক নাম Copsychus saularis। ইংরেজিতে এটি Oriental magpie-robin নামে পরিচিত। উল্লেখ্য যে, এই পাখির বাংলা নামটির সঙ্গে ফরাসী ও ওলন্দাজ নামের মিল আছে। ফরাসী ভাষায় একে বলা হয় Shama dayal এবং ওলন্দাজ ভাষায় একে বলা হয় Dayallijster। এটি বাংলাদেশের জাতীয় পাখি। বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলের সর্বত্রই দোয়েল দেখা যায়।

এছাড়াও বাংলাদেশ ও ভারতের জনবসতির আশেপাশে দেখতে পাওয়া অনেক ছোট পাখীদের মধ্যে দোয়েল অন্যতম। অস্থির এই পাখীরা সর্বদা গাছের ডালে বা মাটিতে লাফিয়ে বেড়ায় খাবারের খোঁজে। গ্রামীণ অঞ্চলে খুব ভোরে এদের কলকাকলি শোনা যায়।দোয়েল গ্রামের সৌন্দর্য আরো অপরূপ করে তোলে।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়: ফড়িং ওডোনাটা বর্গের অন্তর্গত এপিপ্রোকটা উপ-বর্গের, আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে ইনফ্রাঅর্ডার এনিসোপ্টেরার একটি পতঙ্গ। ফড়িং এর বৃহৎ যৌগিক চোখ, দুই জোড়া শক্তিশালী ও স্বচ্ছ পাখা এবং দীর্ঘায়ত শরীর দ্বারা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। বসে থাকার সময় এদের পাখা অনুভূমিক এবং শরীরের সাথে সমকোনে থাকে[১]। ফড়িং এর অন্যান্য পতঙ্গের মতো ছয়টি পা থাকলেও এরা হাঁটতে পারে না, এদের পা কাঁটাযুক্ত এবং ডালপালায় বসার উপযোগী। ফড়িং এর মাথা বড় এবং ইচ্ছেমতো ঘুরানো যায়।

ছোটবেলায় দেখেছি যখন আকাশে শত শত ফরিং উড়েছে; তা দেখে বড়’রা বলেছে বৃষ্টি হবে শীঘ্রই, হয়েছেও তাই! এখন ধীরে ধীরে আগের মতো দেখা যায়না ঘাস ফড়িং।

শুধূ সরকারের জীববৈচিত্র সংরক্ষণসংক্রান্ত আইন, বিধিমালা ও আদেশের ওপর সবকিছু ছেড়ে দিলে চলবে না, সচেতন তো আমাদেরকেই হতে হবে, নতুবা এই প্রাণীগুলোর সাক্ষাত পাবেনা আমাদের আগামী প্রজন্ম। প্রয়োজন শুধুই সচেতনতার।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here