সংবাদ ডেস্ক : ব্রেক্সিট ইস্যুতে আরো একবার বড় ধরনের হোঁচট খেলেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। বুধবার পার্লামেন্টে আরো একবার পরাজিত হলো তার সরকার। এমনই রাজনৈতিক ক্ষত নিয়েই তাকে ব্রেক্সিট আলোচনায় বসতে আজ বৃহস্পতিবার ব্রাসেলস যাচ্ছেন তিনি। গত ১০ দিনের মধ্যে এটা তার তৃতীয়বার ব্রাসেলস যাত্রা। সেখানে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য কেমন হবে তা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি ২৭ দেশের সঙ্গে দর কষাকষিতে বসার কথা তার। কিন্তু তার আগেই তিনি বুধবার পার্লামেন্টে হাউজ অব কমন্সে যেভাবে হেরে যান তাতে বেশ বিব্রত তার সরকার।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন স্কাই নিউজ ও বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার যে ব্লুপ্রিন্ট নিয়ে এগুচ্ছে সরকার তাতে সংশোধনী আনতে হবে। এমন দাবিতে একটি সংশোধনী আনেন তেরেসা মে’র ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ দলের এমপি ও সাবেক এটর্নি জেনারেল ডোমিনিক গ্রিভ। এতে তিনি ব্রেক্সিট বিল চূড়ান্ত করার আগে পার্লামেন্ট তা অর্থপূর্ণ ভোটে দেয়ার আহ্বান জানান। বলেন, পার্লামেন্টে তা ভোটে দিয়ে চূড়ান্ত করতে এবং তারপর তা লিখিত আইনে পরিণত করতে হবে। এ নিয়ে হাউজ অব কমন্সে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় তেরেসা মে’র টিম পার্লামেন্টে তাদের নিজেদের এমপিদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তারা তাদেরকে বোঝাতে চেষ্টা করেন, এমনটা করা হলে তাতে সরকার বিপদে পড়বে। দুর্বল হয়ে পড়বে ব্রেক্সিট সমঝোতায় দর কষাকষি। কিন্তু কিছুতেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় ওই প্রস্তাবটি ৬৫০ আসনের পার্লামেন্টে ভোটে দেয়া হয়। প্রস্তাবের পক্ষে পড়ে ৩০৯ ভোট ও বিপক্ষে পড়ে ৩০৫ ভোট। এর মধ্য দিয়ে শোচনীয় এক পরাজয়ের শিকার হন তেরেসা মে। শুরুতে ডোমিনিক গ্রিভ বলেন, এ বিলের পক্ষে প্রত্যেক সংসদ সদস্যের অবস্থান নিয়ে দাঁড়ানো উচিত এবং তা গণনা করা উচিত। এ সময় তিনি তার নিজ দল কনজার্ভেটিভ পার্টির অনেক সদস্যের কড়া সমালোচনা করেন। তারা তাকে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ করেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতির কারণে ওই প্রস্তাব ভোটে দেয়া হলে সরকার হতাশাজনক অবস্থায় পড়ে বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের এক মুখপাত্র। পার্লামেন্টে এমন বিব্রতকর অবস্থার শিকার হয়ে ব্রাসেলস যাচ্ছেন তেরেসা মে। সেখানে তিনি ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি দ্রুততর করার চেষ্টা করবেন। কিন্তু হাউজ অব কমন্সে এই পরাজয়ের কারণে সরকারকে অবশ্যই ‘ইইউ (উইথড্রয়াল) বিল’ সংশোধন করতেই হবে। এর ফলে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া প্রলম্বিত হতে পারে বলে মনে করছেন মন্ত্রীরা। এর মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র কর্তৃত্বকে অনেকটা দুর্বল করে দিয়েছে। এর আগে জুনে জাতীয় নির্বাচনে একবার বড় ধরনের হোঁচট খান তেরেসা। তার ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ পার্টি ওই নির্বাচনে পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এতে তিনি অনেকটাই দুর্বল হয়ে যান। বৃটিশ পত্রিকাগুলো বলছে, এর মধ্য দিয়ে নিজ দলের ভিতরেই বিদ্রোহীরা তাদের প্রতিশোধ নিয়েছেন তেরেসা মে’র ওপর। এমন শিরোনাম করেছে দ্য টাইমস। দ্য গার্ডিয়ানের প্রধান শিরোনাম ‘টরিদের বিদ্রোহে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী’। দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের প্রধান সংবাদ শিরোনাম ‘হাউজ অব কমন্সে বিদ্রোহের ঝড়। ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এক বড় আঘাত’। দ্য ডেইলি মেইলের প্রথম পৃষ্ঠায় শুধু এ নিয়েই রিপোর্ট। একটি রিপোর্ট দিয়ে প্রথম পৃষ্ঠা মেকআপ দেয়া হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকজন এমপির ছবি দিয়ে যে শিরোনাম করা হয়েছে তাতে একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আপনারা নিজেরা খুশি তো?
… [Trackback]
[…] Find More Info here to that Topic: dailyshongbad.com/2017/12/14/ব্রেক্সিট-পার্লামেন্টে/ […]