সংবাদ ডেস্ক :: বছর ঘুরে আবার ফিরে এসেছে বিজয়ের মাস। আজ ১ ডিসেম্বর। আজকের দিনটিতেই সূচনা ঘটতে যাচ্ছে বাঙালীর কাঙ্খিত মুক্তি সংগ্রামের বিজয় অর্জনের মাস ডিসেম্বরের। পূর্তি হলো স্বাধীনতার ৪৬ বছর। ডিসেম্বর মাস রাষ্ট্র পাওয়ার মাস, কষ্ট পাওয়ার মাস। বাঙালী জাতির একটি নিজস্ব রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাস ডিসেম্বর। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তার এ দেশীয় দোসরদের পরাস্ত করার মাস। আবার ৩০ লাখ মানুষ হারানোর দুঃসহ কষ্টের মাস। একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াকু বাঙালীর মুক্তিযুদ্ধ এ মাসে বিজয়ের সুমহান মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছিল।

এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এসেছে বিজয়ের মাস। যে একটি মাত্র ঘোষণা নিরস্ত্র বাঙালী জাতি সশস্ত্র জাতিতে পরিণত হয়েছিল, মাত্র ১৯ মিনিটের বজ্রকঠিন ভাষণে বাঙালী জাতি পাক হানাদারদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ছিনিয়ে এনেছিল হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন স্বাধীনতার লাল সূর্য- সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চে ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক ‘ওয়ার্ল্ডস ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ’৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ ২১টি বছর যে অমিততেজী ভাষণটি কার্যত নিষিদ্ধ করে রেখেছিল ক্ষমতা দখলকারীরা, সেই ভাষণটিই বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছে। এ অর্জনে গোটা বাঙালী জাতি এখন উদ্বেলিত। ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতাবিরোধীদের পরাজিত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে বিনির্মাণের দীপ্ত শপথে বলিয়ান।

 

মুক্তিযুদ্ধের অগ্নিঝরা সেসব দিনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র যুগিয়েছিল মুক্তির লড়াইয়ের অনিঃশেষ প্রেরণা। সে সময়ের গানে গানে বিধৃত আছে লাঞ্ছিত-নিপীড়িত, মুক্তিপাগল সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর প্রাণের উচ্ছ্বাস, ত্যাগ, লড়াই ও মুক্তির মন্ত্র। উনিশ শ’ একাত্তরে দীর্ঘ ন’টি মাস পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালীর মৃত্যুপণ জনযুদ্ধ শেষে অর্জিত হয়েছিল প্রত্যাশিত বিজয়। লাখো শহীদের আত্মদান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী অবদান, ত্যাগ এবং অসংখ্য মা-বোনের মহামূল্যবান সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ নিজের স্থায়ী আসন অর্জন করে নেয় বিশ্বমানচিত্রে। তাই কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি এই ডিসেম্বর মাসজুড়ে স্মরণ করবে লাখো শহীদকে। তাঁদের অপূর্ণ স্বপ্ন এবং প্রত্যাশা বাস্তবায়নের শপথে নতুন করে উজ্জীবিত হবে।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here