সংবাদ ডেস্ক :: ৯০ শতাংশ ব্যাংকারের অভিমত হস্তান্তরিত ঋণ ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি বাড়াবে। বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ৪০ শতাংশ ব্যাংকারের মতে হস্তান্তরিত ঋণ ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি তৈরি করেছে আর ৫০ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছেন হস্তান্তরিত ঋণ অদূর ভবিষ্যতে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘লোন টেকওভার ইন বাংলাদেশ: ইজ ইট এ হেলদি প্রাকটিসেস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপিত হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের পরিচালক (গ.উ.ক) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের গ্রাহকের ঋণ ক্রয় বা টেক ওভার (ঋণ হস্তান্তরের) করছে। ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকার ঋণ হস্তান্তরের ঘটনা ঘটেছে। এটিকে কেন্দ্র করে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। অনেকাংশে গ্রাহকের সব ধরনের তথ্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যা পরবর্তীতে খেলাপি হয়ে পড়ছে।

গোলটেবিল বৈঠকে ঋণ হস্তান্তরের ওপর গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা। চার সদস্যের গবেষক দলে আরও ছিলেন বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মহব্বত হোসেন, বিআইবিএমের লেকচারার তোফায়েল আহমেদ ও রাহাত বানু।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬০ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছেন পরিচালনা পর্যদের অযৌক্তিক চাপে ঋণ হস্তান্তরে ক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। ৫ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছেন ঋণ হস্তান্তরের অদক্ষতা রয়েছে। এক শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছে ঋণ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে গ্রাহকের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়া হয়।

বৈঠকের প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তরা এখন ব্যাংকিং খাতে ঢুকে পড়েছে। সম্প্রতি একটি ব্যাংকে গত তিন বছরে তিনজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদত্যাগ করতে বাধ্যহয়েছেন। এখন নয় মাস যাবত কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

দুই  থেকে চার লাখ টাকা দিলে এমডি পাওয়া যাবে কিন্তু ব্যাংক চালানোর মতো যোগ্য লোক পাবেন না। ব্যাংকার ভালো হলে নীতিমালার দরকার নাই, বলেন ইব্রাহিম খালেদ।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকগুলোর মধ্যে ঋণ হস্তান্তরের সময়ে সব বিষয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে হস্তান্তর করা উচিত। সব ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়া ঋণ দিলে খেলাপি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত ইসলাম বলেন, ঋণ হস্তান্তরের অনেক খারাপ দৃষ্টান্ত আছে। কিছু গ্রাহক ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য সরকারি ব্যাংককে টার্গেট করে। তারা বিভিন্ন কায়দা-কানুন করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা আর পরিশোধ করেন না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here