স্পোর্টস ডেস্ক :: ১০ থেকে ১২ জন ভারতীয় ও ৬৫ জন বাংলাদেশি বাজিকরকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম থেকে আটক করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) এন্টি করাপশন ইউনিট ও সিকিউরিটি বিভাগ। এমনই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক। তিনি বলেন, ‘আমরা স্টেডিয়াম থেকে ক্রিকেট নিয়ে জুয়া খেলার সময় বাজিকরকে আটক করেছি। এর মধ্যে ৬৫ জন লোকাল ও ১০ থেকে ১২ জন রয়েছে ভারতীয়। কিন্তু বাংলাদেশের আইনে বাজিকরদের আটক করার পর মামলা করার কোনো সুযোগ না থাকায় আমরা তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। তবে তাদের চিহ্নিত করে রেখেছি।
যেন পরে তারা স্টেডিয়ামে আর কোনো দিন প্রবেশ করতে না পারে।’ ক্রিকেট নিয়ে জুয়ার বিষয় গোটা পৃথিবীতে আলোচিত। সেই তালিকা থেকে বাদ নেই বাংলাদেশের নামও। বিশেষ করে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) আসর শুরু হলেই এ জুয়া নিয়ে চলে নানা আলোচনা-সমালোচনা। যে কারণে গেল কয়েকটি আসরে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল ও বিসিবি বেশ সজাগ এ জুয়া ঠেকাতে। সদ্য বাড্ডায় বিপিএল নিয়ে জুয়ার কারণে নড়েচড়ে বসেছে বিসিবিও। যে কারণে প্রতিদিনই বিপিএলে দর্শক হিসেবে মাঠে আসাদের উপর নজর রাখার কড়া ব্যবস্থা করা হয়। খেলা দেখার সময় স্মার্ট ফোনে ক্রিকেট নিয়ে বাজি ধরার সময় তাদের চিহ্নিত করে আটক করে মাঠ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। তবে বাজিকরদের সংখ্যাটা কম নয়। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের তথ্য অনুসারে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে প্রায় ৭৫ জনের বেশি।
প্রতি বছরই বিপিএল এলে ম্যাচ নিয়ে সারা দেশেই বাজিধরা প্রবণতা বেড়ে যায়। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনাও উঠে এসেছে নানা সংবাদ মাধ্যমে। হাটে বাজারে, বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাব, কলেজ প্রায় সবখানেই কোনো না কোনো ভাবে খেলা নিয়ে শুরু হয় নানা রকম বাজি ধরা। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে অনেক সাধরণ মানুষ। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। দেশে জুয়া নিষিদ্ধ নিয়ে নেই কোনো নির্দিষ্ট আইন। সে কারণেই ক্রিকেট নিয়ে বাজি ধরা বন্ধ করতে বেশ অসহায়তা বোধ করছে বিসিবি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। এ বিষয়ে ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেন, ‘আমাদের এ সংবাদ সম্মেলন করার কারণটাও ছিল যেন ক্রিকেট নিয়ে বাজি না ধরে তা নিয়ে জনগণকে জানানো। আসলে আমাদের এর চেয়ে বেশি কিছুই করার নেই। কারণ আমাদের দেশে জুয়া নিষিদ্ধ হলেও বাজিকরদের ধরে তাদের বিপক্ষে মামলা করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা বড় জোর পুলিশের হাতে তুলে দেই। তারা আটক করে নিয়ে যায়। দেখা যায় কদিন পর তারা জামিন নিয়ে বের হয়ে যায়। এখানে আমরা শুধু অনুরোধ করতে পারি, প্রচার করতে পারি তারা যেন ক্রিকেট নিয়ে এ বাজি থেকে বিরত থাকে।’
ক্রিকেট নিয়ে জুয়া বন্ধের জন্য বিসিবির বর্তমান করণীয় নিয়ে, মল্লিক বলেন, ‘আসলে এটি একটি সামাজিক দায়বদ্ধতার ব্যাপার। দেখেন সাধারণ মানুষ দেখা যাচ্ছে দুই বন্ধু পাশাপাশি বসে বাজি ধরে ফেলে এটি আমরা কি করবো? এখানে যারা মাঠে এসে মোবাইল ফোন দিয়ে বাজি ধরছে বিভিন্ন সাইটে গিয়ে তাদের না হয় আটকালাম। কিন্তু বাইরে করলে কি করবো? এ জন্যই আমরা এরই মধ্যে প্রচার শুরু করেছি। খেলা চলার সময় টিভি স্ক্রিনেও সকলকে অনুরোধ করছি। সবাইকে অনুরোধ করতে চাই এ বাজি ধরে আসলে নিজের ক্ষতি ছাড়া অন্য কিছু নয়।’